খান বাহাদুর বাড়ি

আমিরুল হজ্ব খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরীর পূর্বপুরুষ মহান হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সিদ্দিকী পবিত্র ভূমি থেকে বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ে এসে বসতি স্থাপন করে। ইখতিয়ার উদ্দিন খিলজী (বখতিয়ার উদ্দিন খিলজীর পুত্র) ১২০৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা লক্ষণ সেন কে সিংহাসনচ্যুত করে বঙ্গদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করে গৌড়ের রাজধানী স্থাপন করেন স্বভাবতই ধর্মপ্রচারে উদ্দেশ্যে।  মহান সুফি-সাধক গৌড়ে আগমন করেন।  গৌড়ের শত শত বৎসর মুসলিম শাসনের ইতিহাস রয়েছে। তারই অধঃস্তন পুরুষ হযরত সৈয়দ আব্দুল করিম সিদ্দিকী (র.)-এর পুর্বপুরুষ হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ খান তিনি নবাব শায়েস্তা খানের নায়েবে উজির ছিলেন। নবাব শায়েস্তা খান পুত্র বুজুর্গ উমেদ খাঁ কর্তৃক চট্টগ্রাম দখলের পর গৌর দখলের পর মুহাম্মদ খান নায়েবে উজির গৌড় থেকে চট্টগ্রাম চলে আসেন।

 

যেহেতু যুদ্ধ বিগ্রহে রাজা বাদশাগণের উত্থান পতনে গৌঢ় তার রাজধানীর স্বকীয়তা হারায়। মুহাম্মদ খান নায়েবে উজির একাধিক অঞ্চল দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাবেক সাতকানিয়ার অংশ লোহাগাড়া উপজেলার মল্লিক সোবহান গ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেন।

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ্রের ৩ অক্টোবর মল্লিক সোবহানের এ বাড়ির আবদুল ওদুদ মিয়ার দেউড়ি ঘরে এক পারিবারিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এতে এ পরিবারের ৯ নয় সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ পরিবার একজন শিক্ষাবিদকে দিয়ে ঐ সময় একটি ইতিহাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করে। আবদুল ওদুদ মিয়ার পুত্র ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ মুহাম্মদ আলী চৌধুরী ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের এ সব কাগজপত্রের কপি খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরীর তৃতীয় পুত্র আহমদুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রদান করে। এতে দেখা যায়, মুহাম্মদ নায়েবে উজির ৩২০ দ্রোণ ভূ-সম্পত্তির মালিক ছিলেন। মতান্তরে মুহাম্মদ খানের ৬ পুত্র। এক পুত্রের নাম মুহাম্মদ রফিক। তাঁর ৬ পুত্র। এক পুত্রের নাম মুহাম্মদ তকল। তাঁর ২ পুত্র। গোলাম হোসাইন চৌধুরী ও মুহাম্মদ চৌধুরী। আহমদ হোসাইন চৌধুরী ব্রিটিশ আমলের মাঝামাঝি সময়ে মল্লিক সোবহার থেকে বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি গ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেন এবং এ বাড়ির নামকরণ করেন ‘উজির বাড়ি’।

আজও ইটেঁর শুড়কি ও চুনা মিশ্রিত সেই সময়ের দালান ঘর স্মৃতি বহন করে চলেছে। মুহাম্মদ হোসাইন চৌধুরীর ২ পুত্র। জাফর  আলী চৌধুরী ও মুহাম্মদ আলী চৌদুরী। মুহাম্মদ আলী সেকালে উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। আরবী ভাষার পাশাপাশি ফার্সি ভাষারও পণ্ডিত ছিলেন। তি সেকালে ফার্সি ভাষার উপর আইনবিদ ছিলেন। তাঁকে উকিল মুহাম্মদ আলী চৌধুরী বলে সম্বোধন করা হত। বাড়ির সম্মুখ তিনি সেকালে পাবিবারিক সমজিদ ও কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এক কন্যা সন্তান রেখে ইন্তেকাল করেন। উকিল মুহাম্মদ আলী চৌধুরী ইন্তেকাল পরবর্তী একাধিক সংস্বারের পর তাঁরই অধস্তন পুরুষ খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌদুরী ১৯৫৯ খিষ্ট্রাব্দে এ মসজিদ পুণঃনির্মাণ  করেন উকিল মুহাম্মদ চৌধুরীর এক পুত্র মুহাম্মদ আকবর চৌধুরী তাঁরই একমাত্র পুত্র মোজাহেরুন্নবী চৌধুরী। তাঁর ২ পুত্র ও ৩ কন্যা। আমীরুল হজ্ব খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরী, আলহাজ্জ খান সাহেব রফিক আহমদ চৌধুরী, আলহাজ্ব কাজী আজিজ আহমেদ চৌধুরী এবং ২ কন্যা আছিয়া খাতুন চৌধুরী ও আবেদা খাতুন চৌধুরী।